এক নজরে মানিকগঞ্জ
ক্রমিক নং |
|
বিষয় |
বিস্তারিত |
||||||||||||||||||||||||
০১ |
|
জেলা সৃষ্টির ইতিহাস |
লোক সংগীত ও হাজারি গুড়ের দেশ এবং খাদ্যে উদৃত্ত মানিকগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগে অবস্থিত। ১৮৪৫ সালের মে মাসে এটি মানিকগঞ্জ মহকুমা নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই মহকুমা প্রথম ফরিদপুর জেলার অধীন ছিল। পরবর্তীতে ১৮৫৬ সালে মানিকগঞ্জ মহকুমাকে ঢাকা জেলার অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং ১৯৮৪ সালের ১ লা মার্চ মানিকগঞ্জ কে জেলায় উন্নীত করা হয়। |
||||||||||||||||||||||||
০২ |
|
নামকরণ |
মূলতঃ সংস্কৃত ‘মানিক্য’ শব্দ থেকে মানিক শব্দটি এসেছে। মানিক হচ্ছে চুনি পদ্মরাগ। গঞ্জ শব্দটি ফরাসি। মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি সর্ম্পকীয় ইতিহাস আজও রহস্যাবৃত । মানিকগঞ্জ নামে কোন গ্রাম বা মৌজার অস্তিত্ব নেই। ১৮৪৫ সাল মহুকুমা সৃষ্টির আগে কোন ঐতিহাসিক বিবরণে বা সরকারি নথিপত্রে মানিকগঞ্জ এর নাম পাওয়া যায়নি। জনশ্রুতি রয়েছে যে অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে মানিক শাহ নামক এক সুফি দরবেশ সিংগাইর উপজেলার মানিকনগর গ্রামে আগমন করেন এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন । পরবর্তীকালে তিনি এ খানকা ছেড়ে হরিরামপুর উপজেলায় দরবেশ হায়দার সেখের মাজারে গমন করেন এবং ইছামতি তীরবর্তী জনশূন্য চরাভূমি বর্তমান মানিকনগরে এসে খানকা প্রতিষ্ঠা করেন । এ খানকাকে কেন্দ্র করে এখানে জনবসতি গড়ে উঠে। উক্ত জনবসতি মানিক শাহ’র পূণ্য স্মৃতি ধারন করে হয়েছে মানিকনগর। মানিক শাহ শেষ জীবনে ধামরাইতে অবস্থিত আধ্যাত্নিক গুরুর দরবার শরীফে ফিরে যাবার মানসে পূনরায় দ্বিতীয় খানকা ছেড়ে ধলেশ্বরীর তীরে পৌঁছেন। এখানে খানকা স্থাপন করেন। প্রথম ও দ্বিতীয় খানকার ভক্তবৃন্দও এখানে এসে দীক্ষা নিতো । মানিকশাহর অলৌকিক গুনাবলীর জন্য জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। ভক্তবৃন্দ ছাড়া বণিকগণও এখানে বিশ্রাম নিতো এবং রাত্রি যাপন করত । এভাবেই ধলেশ্বরীর তীরে মানিক শাহ’র খানকাকে কেন্দ্র করে জনবসতি ও মোকাম প্রতিষ্ঠিত হয় । কেউ বলেন দুর্ধর্ষ পাঠান সরদার মানিক ঢালীর নামানুসারে মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি হয়। আবার কেউ কেউ বলেন নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিশ্বাস ঘাতক মানিক চাঁদের প্রতি ইংরেজদের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার নামানুসারে ১৮৪৫ সালে মে মাসে মানিকগঞ্জ মহকুমা নামকরন হয়। মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কীয় উল্লেখকৃত তিনটি পৃথক পটভূমি স্থানীয় জনশ্রুতি এবং অনুমান ভিত্তিক । এ ব্যাপারে সরাসরি কোন দলিল দস্তাবেজ অথবা ঐতিহাসিক প্রতিবেদন এপর্যন্ত পাওয়া যায়নি, তবে মানিক শাহের নামানুসারে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামরকণ সম্পর্কীয় জনশ্রুতি এবং ঘটনা প্রবাহের যে চিত্র ও ধারনা পাওয়া যায় তাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় । |
||||||||||||||||||||||||
০৩ |
|
ভৌগলিক অবস্থান |
অবস্থানঃ জেলাটি ২৩০ ৫১’0’’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০০ ০’৩৬’’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। |
||||||||||||||||||||||||
|
আয়তনঃ ১৩৭৮.৯৯ বর্গ কি.মি |
||||||||||||||||||||||||||
|
সীমানা ওসীমান্তবর্তী জেলাসমূহঃ উত্তরে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলা। দক্ষিণে ফরিদপুর, রাজবাড়ি ও ঢাকা জেলা। পশ্চিমে পাবনা ও রাজবাড়ী জেলা। পূর্বে রাজধানী ঢাকা জেলা। |
||||||||||||||||||||||||||
|
ভূপ্রকৃতিঃ সমতল |
||||||||||||||||||||||||||
|
প্রধান নদ-নদীঃ পদ্মা, যমুনা, ধলেস্বরী, কালীগঙ্গা, ইছামতি |
||||||||||||||||||||||||||
|
জলবায়ুঃ নাতিশীতোষ্ণ |
||||||||||||||||||||||||||
|
জীববৈচিত্রঃ সবুজ শ্যামলীমায় ঘেরা এই জনপদের মাটি, পানি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিভিন্ন ধরনের জীবের জীবন ধারণের উপযোগী। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া, উর্বর মৃত্তিকা ও নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অবস্থানের কারণে পর্যাপ্ত সুর্যালোক, অধিক বৃষ্টিপাত ও সবুজ প্রকৃতি নানান জাতের প্রাণি ও জীবের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। এখানকার নদী, খাল ও বিলে নানান জাতের মাছ, পাখি, সরীসৃপ ও উভয়চর প্রাণি বিচরণ করে। বনে বাদাড়ে বিচিত্র প্রজাতির পাখি, বানর, সাপ ও শেয়াল চোখে পড়ে। রয়েছে বিভিন্ন সাইজের কাষ্ঠল, আশ ও ঔষধী গাছ। মানিকগঞ্জে ০৩ টি প্রাকৃতিক মৎস্য অভয়াশ্রম কেন্দ্র রয়েছে, একইসাথে জেলাপ্রশাসনের মাধ্যমে আরো ০৫টি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। |
||||||||||||||||||||||||||
০৪ |
|
প্রশাসনিক তথ্য |
মোট জনসংখ্যাঃ ১৪, ৪৭, ২৯৮জন পুরুষঃ ৭,০২,৮০৭ জন (৪৮.৫%) মহিলাঃ ৭,৪৪,৪৯১ জন (৫১.৫%) |
||||||||||||||||||||||||
|
শিক্ষার হারঃ ৫৬% |
||||||||||||||||||||||||||
|
সংসদীয় আসন সংখ্যাঃ ০৩ টি
|
||||||||||||||||||||||||||
|
|
উপজেলাঃ ০৭ টি
|
|||||||||||||||||||||||||
|
|
|
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সঃ ০৬ টি |
||||||||||||||||||||||||
|
পৌরসভাঃ ০২ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
ইউনিয়ন পরিষদঃ ৬৫ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
মৌজাঃ ১৩৫৭ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
আবাসনঃ প্রস্তাবিত ১৭টি, বাস্তবায়নকৃত ১৩টি আশ্রয়ণ প্রকল্পঃ ১৩টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
আদর্শ গ্রামঃ ২২টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
স্কুলের সংখ্যাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ ৬৪৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ ১৫৮ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
কলেজের সংখ্যাঃ ৩১ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
মেডিকেল কলেজের সংখ্যাঃ ০১ টি |
||||||||||||||||||||||||||
|
জেনারেল হাসপাতালের সংখ্যাঃ ০১ টি |
||||||||||||||||||||||||||
০৫ |
|
ইতিহাস ও ঐতিহ্য |
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিঃ মানিকগঞ্জে জুলাই মাস হতেই মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হতে শুরু করে এবং পাকবাহিনীকে প্রতিরোধ ও পাল্টা আক্রমণ আরম্ভ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানিকগঞ্জের একটি উল্লেখযোগ্য ক্যাম্প ছিল সিংগাইরের গোলাইডাঙ্গা স্কুলে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে-১৯৭১ সালে ২৯ অক্টোবর সকাল ১১:০০ টায় পাকসেনাদের সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু এর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন এবং গ্রামবাসীও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ঘেরাও করে ফেলে। এই যুদ্ধে প্রায় ৮১ জন পাকসেনা নিহত হয়। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের ফলে পাকিস্তানী হানাদাররা কোনঠাসা হতে শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১সালের ১৫ ডিসেম্বর সকাল দশটায় দেবেন্দ্র কলেজের মাঠে বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণের উপস্থিতিতে এক বিজয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়। |
||||||||||||||||||||||||
০৬ |
|
দর্শনীয় স্থান |
সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি প্রাসাদ ও বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, শিবালয়ে তেওতা জমিদার বাড়ী, সদর উপজেলায় নবরত্ন মঠ,বেতিলা-মিতরা জমিদার বাড়ি, কবিরাজ বাড়ী, সিংগাইর রফিক নগরে শহীদ রফিক জাদুঘর, হরিরামপুর ঝিটকায় পোদ্দার বাড়ী। |
||||||||||||||||||||||||
০৭ |
|
বিশেষ উৎসব |
মানিকগঞ্জে বিনোদনের পাশাপাশি লোক জীবনের চারু ও কারুশিল্পের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা সৃষ্টিকারী নানান উৎসব রয়েছে। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বছরব্যাপী আয়োজিত হয় শতাধিক মেলা। এর মধ্যে মানিকগঞ্জের রথের মেলা, শিববাড়ির মেলা, শিবালয়ের বারুনীর মেলা, গড়পাড়ার বুড়ির মেলা, সাওরাইলের চৈত্র সংক্রান্তির মেলা, জয়মণ্টপের পৌষ সংক্রান্তির মেলা, পারিলের ঈদ মেলা, আজহার বয়াতীর মাঘি মেলা, বেতিলার ঐতিহাসিক রাস মেলা, বাঠুইমুড়ীর মেলা, নালীর রাধা চক্করের মেলা, মান্তার মেলা উলেখযোগ্য। এছাড়া প্রতিবছর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৩ ডিসেম্বর হতে দুই সপ্তাহব্যাপী মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আয়োজন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। |
||||||||||||||||||||||||
০৮ |
|
মানচিত্র |
বাংলাদেশের মানচিত্রে মানিকগঞ্জ জেলা |
||||||||||||||||||||||||
|
ঢাকা বিভাগের মানচিত্রে মানিকগঞ্জ জেলা |
||||||||||||||||||||||||||
|
মানিকগঞ্জ জেলার মানচিত্র |
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS